আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন মোহাম্মদ আমির!

প্রকাশিত: ২:৩৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০ | আপডেট: ২:৩৪:অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০

পাকিস্তানের নিউজিল্যান্ড সফরের দলে জায়গা হয়নি মোহাম্মদ আমিরের। দল থেকে বাদ পড়ে প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন হতাশার কথা। অভিমানে জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবেন না বলেও জানিয়েছেন ২৮ বছর বয়সী এই পেসার। পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে আমির বলেন, ‘এই টিম ম্যানেজমেন্টের অধীনে আর খেলতে চাই না। তারা মানসিকভাবে আমাকে আঘাত করেছে। বর্তমান পরিস্থিতির (দল থেকে বাদ পড়ার বিষয়টি) সঙ্গে আমি আর লড়াই চালিয়ে যেতে পারছি না।’ বুধবার রাতে লঙ্কান প্রিমিয়ার লীগের ফাইনাল খেলেছেন মোহাম্মদ আমির। তার দল গল গ্ল্যাডিয়েটর্স ফাইনালে ৫৩ রানে হেরেছে জাফনা স্ট্যালিয়ন্সের বিপক্ষে। নিয়েছেন আসরের চতুর্থ সর্বোচ্চ ১১ উইকেট।

শ্রীলঙ্কা থেকেই পাকিস্তানের টিভি চ্যানেলকে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

শেষ পাঁচ ওয়ানডেতে ৬ উইকেট ও শেষ পাঁচ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আমিরের শিকার ১ উইকেট। অফ ফর্মের কারণে প্রধান কোচ মিসবাহ উল হক, বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনুসরা নাকি তাকে কটু কথা শুনিয়েছেন। আমির বলেন, ‘পারফরমেন্সের কারণে দলের কোচ আমাকে নিয়ে রীতিমতো উপহাস করেছেন। কটু কথা শুনিয়েছেন।’

২০১৯ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন আমির। সেসময় পাকিস্তানের সাবেকদের রোষানলে পড়েন তিনি। কঠোর সমালোচনা করেছিলেন কোচ মিসবাহ উল হকও। হারান পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কেন্দ্রীয় চুক্তিও। টেস্ট থেকে অবসরের বিষয়কে অনেকে ভুল ভাবে নিয়েছেন বলে মত আমিরের। তিনি বলেন, ‘টেস্টে অবসর নেয়ায় অনেকেই বলেছেন ‘‘আমি নাকি ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে খেলার জন্যই টেস্টে আর খেলতে চাই না’’। অথচ আমি চেয়েছি সাদা বলে পাকিস্তান ক্রিকেটকে লম্বা সময় সাহায্য করতে।’

টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে পাওয়া মানসিক আঘাত নিয়ে বিস্তারিত কয়েক দিনের মধ্যেই জানাবেন আমির, ‘আমি গত কয়েক বছর ধরেই এটার (মানসিক আঘাত) মুখোমুখি হচ্ছি। বর্তমান ম্যানেজন্টের ভবিষ্যত পরিকল্পনায় আমি নেই। অথচ আমি এর আগে কখনই বলিনি পাকিস্তানের হয়ে খেলব না। এমন কোন ক্রিকেটার নেই যারা দেশের হয়ে খেলতে চায় না। বর্তমানের চেয়েও বড় মানসিক আঘাত আমাকে সইতে হয়েছে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। আমি আর মানসিক আঘাত নিতে পারছি না। তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিরতি নিচ্ছি। আগামী দুই দিন পর পিসিবির টিম ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে পাওয়া মানসিক আঘাত নিয়ে বিস্তারিত জানাব।’

২০০৯ সালে ১৭ বছর বয়সে টেস্ট অভিষেক মোহাম্মদ আমিরের। দুর্দান্ত গতি আর সুইংয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের নজর কেড়ে নেয়া এই পেসার পরের বছর কুখ্যাত সেই লর্ডস টেস্টে ফিক্সিং করে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন। নিষেধাজ্ঞা শেষে ফেরাটা ছিল রঙিন। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ে বড় ভূমিকা আমিরের। নিষিদ্ধ হওয়ার আগে জেতেন ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

৩৬ টেস্টে ১১৯ উইকেট মোহাম্মদ আমিরের। ৬১ ওয়ানডেতে ৮১ ও ৫০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আমিরের শিকার ৫৯ উইকেট।

জাতীয় দলের হয়ে আর মাঠে না নামার ইঙ্গিত মোহাম্মদ আমির দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে নাম লিখিয়ে। আগামী ২৮শে জানুয়ারি শুরু হবে আবুধাবি টি-টেন লীগ। মোহাম্মদ আমিরকে দেখা যাবে পুনে ডেভিলসে। আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ খেলবে পাকিস্তান। ১৩ বছর পর পাকিস্তান সফরে আসার অপেক্ষায় থাকা প্রোটিয়ারা খেলবে দুই টেস্ট ও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।