রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণার এক ঘণ্টা পরই ‘উল্টে গেলেন’ এমপি একরাম

প্রকাশিত: ২:১৭ অপরাহ্ণ, |                          

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে পীর সাহেব নামধারী বদমাশ আখ্যা দিয়ে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী ও তার ছেলে সাবাব চৌধুরী রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে এক ঘণ্টা পরেই বোল পাল্টালেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭২তম জন্মদিন উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বলেন, আমি ও আমার ছেলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর রাজনীতিই করব না। সেটা জেলা হোক আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হোক- কোথাও থাকব না।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তার এ বক্তব্যের পর রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক মহল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় তিনি দুপুর ২টায় ফেসবুক লাইভে এসে পূর্বের বক্তব্যকে অস্বীকার করে বলেন, আওয়ামী লীগ ছেড়ে দেওয়ার কথা আমি বলিনি। একটি টিভি চ্যানেলের স্থানীয় প্রতিনিধি আমার বক্তব্যকে বিকৃত করে ভুলভাবে পরিবেশন করেছে। এ টিভি চ্যানেলটির স্থানীয় প্রতিনিধি সব সময় আমার বক্তব্যকে ভুল ও মিথ্যাভাবে প্রচার করে। এজন্য আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি বলেছি- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমার প্রাণ। সাম্প্রতিক বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে আমার পারিবারিক এবং অনেক নিকটাত্মীয় আমাকে আর রাজনীতি না করার জন্য বলছেন। আমি নোংরা রাজনীতি পছন্দ করি না। দল যতদিন মনে করবে, আমি ততদিন দলের দায়িত্ব পালন করব। দলের কাজে নিজেকে বিসর্জন দেব। শেখ কামালের জন্ম হয়েছিল বলেই সফলভাবে শেখ হাসিনা রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, কারও কথায় কান না দিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন।

এর আগে দুপুর ১টায় কাদের মির্জা প্রসঙ্গে এমপি একরামুল করিম চৌধুরী আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব আমাকে নিরপেক্ষভাবে একটা দিন সময় দেন, আমি তার (কাদের মির্জা) জিহ্বা টেনে ছিঁড়ে ফেলব। কারণ এ বদমাশ ভাইয়ের (ওবায়দুল কাদের) নাম করে আবার ভাইকেই অপমান করে।

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির বিষয়ে একরাম চৌধুরী বলেন, ঢাকায় ডুপ্লেক্স বাড়ি আর সুইমিংপুল ব্যবহারকারী কেউ কেউ রাজনীতিতে আসতে চান। তবে আমার ছেলেরাও (দলীয় নেতাকর্মী) তাদের আলুভর্তা বানিয়ে ফেলবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমি থাকব না ঠিক আছে, তবে কোনো ছেলেপেলে নিয়ে রাজনীতি করবেন না। ভালো-ভদ্রমানুষ তৈরি করেন। আর ভুলেও আপনি ওই বদমাশের (কাদের মির্জা) কাছে যাবেন না।

অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম শামছুদ্দিন জেহান, আবদুল মোমিন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান নাছের, নোয়াখালী আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গুলজার হোসেন জুয়েল, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ইমন ভট্ট, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান আরমান ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত আদনান।