ভাইরাল মার্কিন দাঙ্গাবাজদের পরিচয় মিলেছে

প্রকাশিত: ৬:৪০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২১ | আপডেট: ৬:৪০:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২১

মার্কিন যৌথ কংগ্রেসকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে তাণ্ডব চালিয়েছে ট্রাম্প সমর্থকরা। অধিবেশন চলাকালে নিরাপত্তার বেড়াজাল ছিড়ে হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকে পড়ে তারা। তছনছ করে দেয় গোটা ভবন। এসব অনুপ্রবেশকারীর মধ্যে বিশেষভাবে নজর কেড়েছেন কয়েকজন। তাদের ভাইরাল ছবি মুহূর্তেই বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়ে। তাদের কয়েকজনের পরিচয় প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো। সিএনএন, আলজাজিরা।

যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে হামলাকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছেন খালি গায়ে মাথায় শিং ও পশুর চামড়া পরা এক ব্যক্তি। জানা গেছে, তার আসল নাম জেক অ্যানজেলি। তিনি ২০১৯ সাল থেকে অ্যারিজোনা ক্যাপিটল ভবনে রয়েছেন। সেখান থেকে বেশকিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার করেছেন, বিশেষ করে বিতর্কিত কিউঅ্যানন বিষয়ক।

উগ্র ডানপন্থী কিউঅ্যানন তত্ত্বের বিশ্বাসীরা মনে করেন, শয়তানের উপাসক ও শিশুনিপীড়ক একটি গোপন সংগঠন বিশ্বব্যাপী শিশুপাচার কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং এরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের শত্রু। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই গোপন সংগঠনের বিরুদ্ধে একাই লড়ে যাচ্ছেন। এই লড়াই চালিয়ে যেতে ট্রাম্পের ক্ষমতায় থাকা দরকার বলে বিশ্বাস করেন কিউঅ্যাননরা।

এই তত্ত্বের কোনও ধরনের যুক্তিসঙ্গত তথ্য বা প্রমাণ কোথাও মেলেনি। তারপরও অনুসারীর সংখ্যা নেহায়েৎ কম নয়। জেক অ্যানজেলি তাদেরই একজন। আসল নামের বদলে তিনি নিজেকে ‘কিউ শামান’ হিসেবেই পরিচয় দিতে পছন্দ করেন।

গত অক্টোবরে অ্যারিজোনা রিপাবলিককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যানজেলি জানিয়েছিলেন, তিনি মাথায় শিং ও চামড়া পরেন শুধু মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। এতে তার কিউঅ্যানন তত্ত্ব প্রচারে সুবিধা হয়

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির অফিসে টেবিলের ওপর পা তুলে বসে থাকা লোকটির নাম রিচার্ড বার্নেট। তিনি আরাকানসাসের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। ট্রাম্পের বক্তব্য শুনতেই সুদূর ওয়াশিংটন ডিসিতে এসেছিলেন মধ্যবয়সী বার্নেট। তবে এই ট্রাম্প ভক্তের দাবি, তিনি ইচ্ছা করে ক্যাপিটল ভবনে ঢোকেননি। ভিড়ের ধাক্কায় বাধ্য হয়েই ভেতরে চলে গিয়েছিলেন, পরে পেলোসির অফিসটা খুঁজে পান।

বার্নেট ফাইভ নিউজ নামে একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ওই সময় আমি টেবিলে পা তুলে দিয়েছিলাম। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, কোনও গর্দভের কারণে পা কেটে গেছে। আর তার (পেলোসি) খামের ওপর আমার রক্তও ঝরেছে। একারণে আমি সেটি তুলে পকেটে নিয়ে আসি আর তার টেবিলে একটি সিকি (২৫ পয়সা) রেখে আসি, কারণ আমি চোর নই। যদিও তার এই দাবির পক্ষে তেমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং ভাইরাল ছবিগুলোতে তাকে বেশ হাস্যোজ্জ্বলই দেখা গেছে।

জানা যায়, রিচার্ড বার্নেট নিজেকে ‘শেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী’ হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি ‘সেভ আওয়ার চিলড্রেন’-এর জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন। সম্প্রতি যুক্ত হয়েছেন কিউঅ্যাননের সঙ্গে। ক্যাপিটল হিলে হামলার সময় সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিদের শনাক্তে সবার কাছে সহযোগিতা চেয়েছে এফবিআই। বৃহস্পতিবারই তারা দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পরে।

সম্ভাব্য মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করলে বার্নেট বলেন, আমি ভয় পাচ্ছি নাকি? মোটেও না। আমি কিছু করিনি। আমি দরজা ভাঙিনি। সেখানে আমার থাকার কথা না। আমি আশপাশে বাথরুম খুঁজছিলাম। আমাকে জোর করে ঢোকানো হয়েছিল