মডার্নার টিকা অনুমোদন দিলেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: ৫:৩৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০ | আপডেট: ৫:৩৬:অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০

করোনার প্রকোপ দেখা দেয়ার ১১ মাসে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে কার্যকরি ভ্যাকসিন তথা টিকার অভ্যাবে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২১ হাজার মার্কিনির মৃত্যু হয়েছে। এখনও প্রতিদিনই তিন হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। পাশাপাশি আক্রান্ত পৌনে দুই কোটির বেশি মানুষ। এখনও গড়ে শিকার হচ্ছেন কয়েক লাখ মানুষ।

এমতাবস্থায় ফাইজার-বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনা টিকা অনুমোদনের পর এবার মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মডার্নার আবিষ্কৃত টিকারও অনুমোদন দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) এক টুইটবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি। খবর এএফপির।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কোন বাধা ছাড়াই মডার্নার ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়া হল। শিগগিরই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।’

এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ভ্যাকসিনটি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন দেয় আমেরিকার সরকারি উপদেষ্টা প্যানেল। অপেক্ষা ছিল প্রেসিডেন্টের আনুষ্ঠানিক সম্মতির।

গত সোমবার ফাইজার-বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনা টিকা অনুমোদন পাওয়ার পর মডার্না হবে আমেরিকায় দ্বিতীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন।

এদিকে চলতি মাসের শেষের দিকেই মডার্নার এই টিকার প্রয়োগ শুরু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) মডার্নার টিকা জরুরি অনুমোদনের জন্য সরকারি বিশেষজ্ঞ প্যানেলে ভোট হয়। এতে ২০-০ ভোটে টিকাটিকে নিরাপদ হিসেবে অনুমোদন পায়। বলা হয়, ১৮ বছর থেকে এর ওপরের বয়সী ব্যক্তিদের জন্য এ টিকা ঝুঁকিমুক্ত।

মডার্না তাদের এ টিকার কার্যকারিতা ৯৪ শতাংশ বলে দাবি করে। অনুমোদনের পর মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি থেকে ২০০ মিলিয়ন ডোজ টিকা কিনছে ট্রাম্প সরকার।

এর আগে বৈশ্বিক মহামারি করোনায় ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনা টিকা ছাড়পত্র দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় প্রয়োগ শুরু হয়। যা নিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্টে মাইক পেন্স।

ষষ্ঠ দেশ হিসাবে আমেরিকা ফাইজারের টিকাকে ছাড়পত্র দেয় আমেরিকা। প্রথম দেশ হিসেবে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রয়োগ করেছে ব্রিটেন। টিকাকরণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে সেখানে। এরপর বাহারাইন, কানাডা, সৌদি আরব এবং মেক্সিকো ওই টিকা ব্যবহারের অনুমতি দেয়।

সম্প্রতি, আমেরিকার বিশেষজ্ঞ কমিটির ১৭ সদস্য ফাইজারের টিকা জরুরি ব্যবহারের পক্ষে রায় দেয়। যেখানে চার জন প্রয়োগের বিপক্ষে ও একজন অনুপস্থিত ছিলেন।

বিষেশজ্ঞ কমিটির কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, ‘টিকার বৈজ্ঞানিক ফল মাথায় রেখে ১৬ ঊর্ধ্ব নাগরিকদের জন্য কি এই টিকা ব্যবহার করা যায়?’ সেখানে টিকা পরবর্তী সময়ের ঝুঁকির কথাও মাথায় রাখতে বলা হয়েছিল। তার উত্তরেই বিশেষজ্ঞ কমিটি ছাড়পত্র দিয়েছে।

ঘটনাচক্রে গত ১০ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) প্রায় ৪৪ হাজার মানুষের উপর টিকা প্রয়োগ করে তার ফলাফল নিউ ইংল্যান্ড জার্নালে প্রকাশ করেছে সংস্থা। তারপরেই আমেরিকায় এসেছে ছাড়পত্র দেয়ার দাবি।

ফলাফলে দাবি করা হয়েছে, এই করোনা টিকা গড়ে ৯৫ শতাংশ কার্যকর। তেমন কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও এই টিকার ফলে দেখা যায়নি। আরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই টিকা তৈরি করার ফলেই এই সাফল্য বলে জানিয়েছেন ফাইজারের বিজ্ঞানীরা।

তবে খারাপ খবর এসেছে ব্রিটেন থেকে। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে টিকা নেয়ার পর দুই স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে অ্যালার্জি দেখা দিয়েছে। সেই কারণে ছাড়পত্র পেলেও এই টিকার গায়ে একটি লেবেল সাঁটা থাকবে, যেখানে সতর্ক করা থাকবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে।