অবৈধ কেন? বৈধভাবে রয়েছে ইউরোপে প্রবেশের সুযোগ

প্রকাশিত: ২:২৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২১ | আপডেট: ২:২৭:অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২১

অবৈধ পন্থায় স্বপ্নের মহাদেশ ইউরোপে প্রবেশ করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই নির্মম মৃত্যুর শিকার হচ্ছেন অনেকে। তাছাড়া অমানবিক নির্যাতন তো আছেই। কিছু দিন আগে বসনিয়ার জঙ্গলে আটকে পড়া হাজার হাজার অভিবাসীর খবর আসে। প্রচণ্ড শীতে খোলা আকাশের নিচে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। এক দিকে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। অন্য দিকে পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা। এর মধ্যে আশ্রয়ের তাবু আগুনে পুড়ে যাওয়ায় মানবেতর অবস্থায় পড়তে হয়েছিল ইউরোপের দেশে অভিবাসন-প্রত্যাশীদের।

তার পরেও বন্ধ হয়নি ইউরোপযাত্রা। দুর্বিষহ ভোগান্তি ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখনো অব্যাহত রয়েছে অবৈধ পন্থায় ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা।

সবশেষ বুধবার সুনামগঞ্জের দু’যুবক ক্রোয়েশিয়া থেকে নদীতে সাঁতার কেটে ইতালি ঢোকার সময় প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় মারা যান। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই বাংলাদেশসহ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সাগরপথে ইউরোপে ঢুকতে গিয়ে অভিবাসন-প্রত্যাশীদের মৃত্যু হচ্ছে।

জানা গেছে, লাখ লাখ টাকা খরচ করে দালালের খপ্পরে পড়ে তারা অবৈধ উপায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপের পথে যাত্রা করেন। অথচ আরো কম খরচে বৈধভাবে ইউরোপে আসা যায়। এতে জীবনের ঝুঁকিও থাকে না।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উচ্চশিক্ষার জন্য এখনো ইউরোপে আসা অত্যন্ত সহজ। সুইডেন, ডেনমার্ক ফ্রান্স ও জার্মানিসহ বেশ ক’টি দেশে ভর্তির জন্য আইইএলটিএস বাধ্যতামূলক হলেও মাল্টা, পর্তুগাল, স্পেনের মতো দেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইএলটিএস ছাড়াও আবেদন করা যায়। তাছাড়া দালালের মাধ্যমে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা খরচ হলেও শিক্ষার্থী হিসেবে প্রবেশ করতে এত টাকা খরচ হয় না। আর শিক্ষার্থী হিসেবে ঢুকলে যেকোনো দেশেই ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা তৈরি হয়।

জার্মানিতে লেখাপড়া শেষে চাকরি খোঁজার জন্য এক বছর সময় দেয়া হয়। পর্তুগালে অতি সহজেই রেসিডেন্ট পারমিট পাওয়া যায়। সেনজেনভুক্ত ইউরোপের অন্য দেশেও লেখাপড়ার পাশাপাশি চাকরির সুযোগ রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কয়েক হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী এসব সুযোগ নিয়ে এই অঞ্চলে প্রবেশ করেছেন। তবে বিষয়টি হয়তো সবার জানা নেই।

ইউরোপে বৈধভাবে প্রবেশের আরেকটি সুযোগ রয়েছে কৃষি ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে। ইউরোপের প্রায় প্রতিটি দেশেই দক্ষ শ্রমিক ও দক্ষ নার্সের চাহিদা রয়েছে। প্রশিক্ষিতরা সহজেই এখাতে চাকরি নিয়ে আসতে পারেন। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যেগ নিতে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মত দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউরোপের শ্রমবাজারে যে ধরনের প্রশিক্ষিত জনশক্তির চাহিদা রয়েছে, বাংলাদেশে এ ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে বৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের হার বাড়ানো যাবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকারের সাথে চুক্তি করার উদ্যোগ নিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর জন্য প্রয়োজন বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঠিক পরিকল্পনা।